ই-পেপার মঙ্গলবার ২২ অক্টোবর ২০১৯ ৬ কার্তিক ১৪২৬
ই-পেপার মঙ্গলবার ২২ অক্টোবর ২০১৯

যুদ্ধাপরাধ মামলায় ঝিনাইদহে আ.লীগ নেতাসহ গ্রেফতার ২
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০০ এএম | প্রিন্ট সংস্করণ

যুদ্ধাপরাধ মামলায় ঝিনাইদহের আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রশিদ মিয়া ও তার আত্মীয় শাহেব আলীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার দুপুরে সদরের নারায়ণপুর ত্রিমোহনী থেকে সাদা পোশাকের একদল পুলিশ ওয়ারেন্টের ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতার করে। আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রশিদ এ সময় ডাকবাংলা চালকল মালিক সমিতির নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করছিলেন।
ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান জানান, মানবতাবিরোধী মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা অনুয়ায়ী আব্দুর রশিদ ও শাহেব আলী নামে দুজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
অনুসন্ধান করে জানা গেছে, ২০০৯ সালের ২৫ মার্চ সদর উপজেলার কোলা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ও সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্য আশির উদ্দীন তার এলাকার ৬ রাজাকারের বিরুদ্ধে ঝিনাইদহ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি প্রাথমিক অনুসন্ধান করে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসিকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। সামাজিক ও রাজনৈতিক চাপে সে সময় মামলাটি আপোস রফা করতে বাধ্য হন মুক্তিযোদ্ধা আশির উদ্দীন। অভিযোগপত্রে আশির উদ্দীন উল্লেখ করেন, ৭১ সালে পাকিস্তানি পক্ষ ত্যাগ করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি দেশ স্বাধীনের জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে যোগ দেন। এ খবর জানতে পেরে রাজাকার মসলেম উদ্দীন, আব্দুর রশিদ, আলাউদ্দীন, হাকিম আলী খোন্দকার, শাহজাহান, আসমত ও শাহেব আলীসহ ৫০ জন রাজাকার কোলা গ্রামে তার বাড়ি ঘেরাও করে। আশির উদ্দীন ও তার আরেক ভাই মহিরুদ্দীন এ সময় কাশিপুর গ্রামের দিকে পালিয়ে যায়। রাজাকাররা তাদের দুই ভাইকে না পেয়ে বড়ভাই আজিবর মণ্ডল, হবিবার মণ্ডল ও আনসার মণ্ডলকে ধরে নিয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ঘোড়ামারা গ্রামের ব্রিজের নিচে হত্যার পর লাশ গুম করে। আসামিরা এ সময় তাদের ৫টি ও পার্শ্ববর্তী গ্রামের আরও ২৫টি বাড়ি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেন। রাইফেলের বাট দিয়ে পিটিয়ে আহত করে বৃদ্ধ পিতা দুখি মাহমুদ ও মা কামিনী খাতুনকে। মুক্তিযোদ্ধা আশির উদ্দীনের মৃত্যুর পর তার ভাতিজা আনোয়ার হোসেন দেশে মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী ট্রাইব্যুনালে আরেক দফা অভিযোগ করেন বলে তাদের পারিবারিক সূত্রে বলা হয়েছে।
গত ৯/১০ মাস আগে মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী ট্রাইব্যুনাল থেকে তদন্তে মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়িঘর জালিয়ে দেওয়া ও স্বজনদের হত্যার প্রমাণ সংগ্রহ করে। অভিযোগ পাওয়া গেছে দেশ স্বাধীনের পর আইডিএল, জামায়াত, চরমপন্থি সংগঠন হক গ্রুপ, সর্বহারা ও সর্বশেষ আওয়ামী লীগে যোগদান করেন রাজাকার আব্দুর রশিদ।
এলাকায় কথিত আছে চাঁদাবাজি, ইয়াব, অস্ত্র ব্যবসা ও সালিশ বিচারের নামে কোটি কোটি সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলেন এ রাজাকার পরিবার। তাদের অত্যাচারে হলিধানী ইউনিয়নের মানুষ একরকম অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। গুজব আছে আওয়ামী লীগকে সিঁড়ি বানিয়ে ঝিনাইদহ, ঢাকা ও ভারতেও বাড়ি তৈরি করেছে রাজাকার আব্দুর রশিদ।
এ বিষয়ে আব্দুর রশিদের বড় ছেলে হারুন অর রশিদ জানান, কে বা করা আমার বাবাকে ধরে নিয়ে গেছে তা আমি বলতে পারি না। তবে ঝিনাইদহের কোনো জায়গায় খুঁজে আমি আমার বাবার সন্ধান পায়নি।
ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান জানান, মানবতাবিরোধী মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা অনুযায়ী আব্দুর রশিদ ও শাহেব আলী নামে দুজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।




এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড-এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ।
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫। ই-মেইল : [email protected]