সময়ের আলো পত্রিকাকে জানালেন শিক্ষামন্ত্রী
যোগ্য সব প্রতিষ্ঠান এমপিওর আওতায় আসছে
এম মামুন হোসেন
|
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, যোগ্য বিবেচিত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির আওতায় আসছে। যেকোনো ধারারই হোক যোগ্য বিবেচিত একটি প্রতিষ্ঠানও এমপিওর বাইরে যাচ্ছে না। রোববার রাতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এ কথা বলেন।
নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের আন্দোলন প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, তারা বলছে যোগ্যতার বিষয়টি বিবেচনায় না নিয়ে যারা স্বীকৃতি পেয়েছি তাদেরই এমপিওভুক্তি করতে। স্বীকৃতির বিষয়টা তো ভিন্ন একটি জিনিস। ধরেন এটা অনেকটা ট্রেড লাইসেন্সের মতো। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান একটি ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করে। সুনির্দিষ্ট মানদণ্ডের ভিত্তিতেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিও দেওয়া হবে। বিদ্যমান এমপিও নীতিমালা নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষকদের কিছু জায়গায় আপত্তি আছে। আমার কাছে মনে হয়েছে নীতিমালায় কিছু কিছু জায়গায় আরও উন্নত করার এবং সংশোধন করার সুযোগ রয়েছে। আইন, নীতিমালা, সংবিধান সবই তো সংশোধন হয়, তাই না! তিনি জানান, পরিবর্তিত নীতিমালা অনুযায়ী এখন থেকে প্রতিবছর এমপিও দেওয়া হবে। এমপিওপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের মান নিয়মিত মনিটর করা হবে এবং যারা নীতিমালা অনুযায়ী ফলাফল করবে না তাদের এমপিও বাতিল করা হবে। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ২০১৮ সালে এমপিও নীতিমালার আলোকে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ করা হয়। সেই নীতিমালার ভিত্তিতে আবেদন পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই-বাছাই করে এমপিওর পূর্ণাঙ্গ তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। সম্পূর্ণ কম্পিউটারাইজড পদ্ধতিতে যাতে করে কেউ যেন ইচ্ছাকৃতভাবে বা অনিচ্ছাকৃত ভুলভ্রান্তি করতে না পারে। সেই তালিকা প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। বেশ অনেক বছর পরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হচ্ছে। এবার অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে একসঙ্গে এমপিওভুক্তির আওতায় আনতে যাচ্ছি। তাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ও আবারও পুঙ্খানুপুঙ্খ যাচাই-বাছাই করেছে। বর্তমান নীতিমালা অনুযায়ী এ বছরের এমপিও চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে নতুন কোনো প্রতিষ্ঠানের অন্তর্ভুক্তির সুযোগ নেই। এর ব্যত্যয় করা হলে আদালতে মামলা হবে। ফলে যোগ্য বিবেচিত হওয়া সকল এমপিও বন্ধ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, প্রতিবছর সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করবে। সংশোধিত নীতিমালায় আগামী বছর এমপিওভুক্ত করা যেতে পারে। যারা এবার এমপিও থেকে বাদ পড়ছেন তারা চেষ্টা করলে আরও ভালো করতে পারবেন। আগামী বছর সংশোধিত নীতিমালার আলোকে আবেদন করে বাদ পড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হতে পারবে। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি আরও বলেন, নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা চান যে যাদেরই শুধুমাত্র স্বীকৃতি আছে তাদের এমপিওভুক্তি। যেকোনো রাষ্ট্রই হোক, সরকারের যদি সামর্থ্য থাকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে একসঙ্গে এমপিও করার তাহলেও মানের বিষয়টি বিবেচনায় আনা উচিত বলে আমি মনে করি। কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যদি যথাযথ পরিমাণ শিক্ষার্থী না থাকে, পরীক্ষার্থী না থাকে, পাসের হার সন্তোষজনক না থাকে, তাহলে সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সরকারি বেতন-ভাতা দেওয়া কতটা যৌক্তিক? কারণ এটি তো জনগণের অর্থ এবং তা যোগ্যতার ভিত্তিতে দেওয়া উচিত। এদিকে এমপিওভুক্তির দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন আন্দোলনকারী নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা। সোমবার সকাল ১০টা থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ অনশন কর্মসূচি শুরু করেছেন তারা। আগের দিন রাতে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষকরা। বৈঠক শেষে তারা আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরুর ঘোষণা দিয়েছিলেন। স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিও দাবি করছেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা। |