পাইকারি পর্যায়ে আবারও বিদ্যুতের দাম বাড়াতে চায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ ও সরবরাহে ঘাটতির কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে (বিইআরসি) দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে সংস্থাটি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খুচরা দাম না বাড়িয়ে বিদ্যুতের পাইকারি দাম বাড়ালে গ্রাহক পর্যায়ে এর সরাসরি প্রভাব পড়বে না। তবে পাইকারি দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে বিতরণ কোম্পানিগুলো বিদ্যুতের খুচরা দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিতে পারে। সেটি বিবেচনায় নিলে গ্রাহক পর্যায়েও প্রভাব পড়বে। বিদ্যুৎ বিভাগ এবং পিডিবি সূত্র জানায়, চলতি সপ্তাহেই পিডিবি গ্রাহক পর্যায়েও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেবে।
সর্বশেষ ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছিল। তখন গড়ে ইউনিট প্রতি ৩৫ পয়সা দাম বাড়ানো হয়, যা ঐ বছরের ডিসেম্বর থেকে কার্যকর করা হয়। আর ২০১৫ সালে সর্বশেষ পাইকারি বিদ্যুতের দাম ১৮ দশমিক ১২ শতাংশ বাড়ানো হয়।
এ প্রসঙ্গে পিডিবি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী খালেদ মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর জন্য একটি প্রাথমিক প্রস্তাব দিয়েছি। প্রস্তাবে কোনো সংখ্যার কথা উল্লেখ করিনি। শুধু লোকসানের একটা হিসাব দিয়েছি। চিঠিতে বলেছি, সময় আসছে, বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে। গ্যাসের দাম বেড়ে গেছে। গ্যাসের দাম বাড়ানোর ফলে বিদ্যুতের উত্পাদন খরচও বাড়ছে। ফলে বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে।
বিইআরসির এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, কমিশনের কাছে পাইকারি বিদ্যুতের দাম সমন্বয়ের প্রস্তাব গত সপ্তাহে জমা দিয়েছে পিডিবি। গ্রাহক পর্যায়ে সব বিতরণ কোম্পানি যদি দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়, তাহলে সব একসঙ্গে নিয়ে কমিশনের সভায় উপস্থাপন করা হবে। সভায় প্রস্তাব অনুমোদন পেতে পারে আবার বাতিলও হতে পারে। যদি অনুমোদন করা হয়, তাহলে গণশুনানিতে বিষয়টি আলোচনা হতে পারে।
পিডিবির অন্য এক কর্মকর্তা বলেন, বর্তমান মূল্যহারে ২০২০ সালে আমাদের বিদ্যুৎ বিক্রি করে আয় হতে পারে ৩৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকা; কিন্তু ঐ সময় আমাদের প্রয়োজন হবে ৪৫ হাজার ২০৮ কোটি টাকা। ফলে বাকি ৮ হাজার ৬০৮ কোটি টাকা কীভাবে পূরণ করা হবে, তা-ই জানানো হয়েছে কমিশনকে। কমিশন এখন সিদ্ধান্ত নেবে বিদ্যুতের দাম বাড়াবে নাকি ভর্তুকির আকারেই পিডিবিকে দেওয়া হবে।