শ্রীমঙ্গলে আওয়ামীলীগের সম্মেলনে হানিফ
‘খালেদাকে বাকি জীবন জেলেই কাটাতে হবে’
শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি
|
কারাবরণই শেষ না, খালেদা জিয়ার সামনে আরো কঠোর দিন অপেক্ষা করছে। বাকি জীবন তাকে কারাগারেই কাটাতে হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ। রোববার দুপুরে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামী লীগ এর ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অথিতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। হানিফ বলেন,আরবার হত্যার ঘটনাকে ইস্যু করে বিএনপি এখন সরকার পতনের স্বপ্ন দেখছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ কচু পাতার পানি নয় যে টোকা দিলে পড়ে যাবে। আওয়ামী লীগের শেকড় মাটির অনেক গভীরে প্রথিত, আওয়ামী লীগ অনেক শক্তিশালী সংগঠন। ইতোমধ্যে আরবার হত্যার সাথে জড়িত ১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে জানিয়ে হানিফ বলেন, দ্রুত বিচার আইনে তাদের বিচার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। তিনি বলেন, ছাত্র রাজনীতি নয় শিক্ষকদের পেশাজীবী রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। শিক্ষকরা কেন রাজনীতি করবেন। শিক্ষকদের লেজুরবৃত্তি রাজনীতির কারণে ছাত্ররা আজ তাদের সম্মান দেয় না। ভিসি, প্রো ভিসি হওয়ার জন্য শিক্ষকরা লেজুরবৃত্তির রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েছে। শিক্ষকদের এসব দলীয় লেজুড়বৃত্তি রাজনীতি পরিহার করারও আহবান জানান তিনি। হানিফ বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াসহ বিএনপি নেতারা তাদের কৃতকর্মের জন্য জেল খাটছেন। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা, জ্বালাও পোড়াও রাজনীতি, দুর্নীতি ও অপ-রাজনীতির জন্য তারা এখন তাদের পাপের প্রায়াশ্চিত করছেন। সেসময় কিবরিয়া, আহসান উল্লাহ মাস্টারসহ ২৬ হাজার আওয়ামী লীগ নেতাতে হত্যা করা হয়েছিল। আজকে মির্জা ফখরুল ইসলাম কান্না করেন, তখন তার এই কান্না কোথায় ছিল? এজন্য তারা সহজেই আর জেল থেকে বের হতে পারবেন না।’ বিএনপির অতীত দুর্নীতির ইতিহাস ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি আমলে ভারতের বিখ্যাত টাটা শিল্প গোষ্ঠী ও সামস্যাং বড় বড় বিনিয়োগ করতে বাংলাদেশে এসেছিল। চুক্তির সম্পাদনের আগে রতন টাটার কাছে তারেক রহমানের পক্ষে টেন পার্সেন্ট কমিশন চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু রতন টাটা সে প্রস্তার ফিরিয়ে দিয়ে দিল্লী ও সামস্যাং ভিয়েতনামে বিনিয়োগ সরিয়ে নেয়।’ মাহবুবুল আলম হানিফ আরো বলেন, ‘৭৫-এ শুধু রাজনৈতিক কারণে বা ক্ষমতার কারণে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়নি। এর পেছনে খুনিদের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা ছিল। সে পরিকল্পনায় পাকিস্তানের সাথে জিয়াউর রহমানের হাত ছিল। ৭৪ এ জুলফিকার আলী ভূট্টো জাতিসংঘে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, পূর্ব পাকিস্তান অচিরেই পাকিস্তান ফেডারেশনের অধীনে আসবে। কিন্তু কিসের ভিত্তিতে ভূট্টো সেদিন একথা বলেছিলেন? ৭৫ পরবর্তিকালে জিয়াউর রহমান ক্ষমতাসীন হয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তিদের পুনর্বাসন করে পাকিস্তানী মদদপুষ্ট সরকার কায়েম করেছিল। জিয়াউর রহমান কখনই মুক্তিযুদ্ধ করেননি। জিয়াউর রহমান ছিলেন পাকিস্তানী বাহিনীর এজেন্ট।’ শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো: আছকির মিয়ার সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক এম এ মান্নানের সঞ্চালনায় সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগীয় দায়িত্বে) আহমদ হোসেন, বিশেষ অতিথি ছিলেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র বদর উদ্দীন কামরান, ড. মো: আব্দুস শহীদ এমপি, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অধ্যাপক রফিকুর রহমান। সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব মিছবাহুর রহমান। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বলেন, ‘ভারতের সাথে চুক্তি করে বাংলাদেশই লাভবান হয়েছে। শেখ হাসিনা দেশ বিক্রির রাজনীতি করেন না। তিনি সেবাদাস নন। বাংলাদেশ একমাত্র বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার কাছেই নিরাপদ, দেশের মানুষ নিরাপদ। আরবার হত্যাকারীদের প্রসঙ্গে আহমদ হোসেন বলেন, ‘আরবারের ঘাতকরা ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশকারী ছাত্রশিবির। আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারীদের কোন ঠাঁই হবে না।’ এর আগে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা আহমদ হোসেন ও মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নেছার আহমদ এমপি- পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। উল্লেখ্য, দীর্ঘ তের বছর পর মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। |