প্রকাশ: রোববার, ৫ মে, ২০১৯, ১২:৪৩ এএম | অনলাইন সংস্করণ
ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভালো, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার আশীর্বাদ-অভিশাপ।
জন্ম ১৮১৮- প্রভাবশালী জার্মান সমাজবিজ্ঞানী ও মার্কসবাদের প্রবক্তা কার্ল মার্কস।
১৮১৮ সালের ৫ মে প্রুশিয়ার ট্রিয়ের শহরে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার অধ্যয়নের বিষয়বস্তু ছিল আইনশাস্ত্র, ইতিহাস ও দর্শন। এটা সাধারণ প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় অধ্যয়নের কথা বলা হচ্ছে। তিনি ডক্টরেট ডিগ্রিও লাভ করেন। তার জ্ঞানের আকাঙ্ক্ষা ছিল ব্যাপক। বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা, গণিত প্রভৃতির গভীর অনুশীলন ও অধ্যয়ন তিনি করেছিলেন। তার আজীবন সহযোগী ফ্রেডরিক এঙ্গেলস-র সাথে তিনি মার্কসীয় মতবাদ প্রতিষ্ঠা করেন। এই মতবাদই বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের মতবাদ হিসাবে পরিচিত। এই মতবাদ শূন্য থেকে সৃষ্ট নয়। মানব সভ্যতার অগ্রগতির যে রাজপথ সেই রাজপথ থেকেই উদ্ভুত হলো বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের মতবাদ।
মার্কসবাদ ঊনবিংশ শতাব্দীর দার্শনিক, অর্থনীতিবিদ, সাংবাদিক এবং বিপ্লবী কার্ল মার্কস ও ফ্রিডরিখ এঙ্গেলসের তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা রাজনৈতিক অনুশীলন ও সামাজিক তত্ত্ব। এই তত্ত্বে সামাজিক পরিবর্তনের দ্বান্দ্বিক ও ঐতিহাসিক বস্তুবাদী দৃষ্টিতে সামাজিক দ্বন্দ্ব ও শ্রেণি-সম্পর্ককে ভিত্তি করে সমাজ বিশ্লেষণের বিশ্বদর্শন ও প্রক্রিয়া বয়ান করা হয়েছে। মার্কসবাদী প্রক্রিয়াকে পদ্ধতিগত অর্থনৈতিক পরিবর্তনে শ্রেণিসংগ্রামের ভূমিকা এবং পুঁজিবাদের বিকাশের সমালোচনা ও বিশ্লেষণে অর্থনৈতিক ও সামজিক-রাজনৈতিক জিজ্ঞাসা ও প্রয়োগে ব্যবহার করা হয়।
প্রয়োগিক বিবেচনায় মার্কসবাদ হচ্ছে মালিক শ্রেণির তথা বুর্জোয়া শ্রেণির শোষণ, নির্যাতন, নিপীড়ন তথা মজুরি-দাসত্ব থেকে প্রলেতারিয়েতের বা শ্রমিক শ্রেণির মুক্তির মতবাদ। এটি হচ্ছে বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব ও বৈপ্লবিক সাধনক্রিয়ার সামগ্রিক রূপ। ঊনিশ শতকের জার্মান দর্শন, ইংরেজি অর্থশাস্ত্র এবং ফরাসি সমাজতন্ত্র রূপে মানবজাতির যা শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মার্কসবাদ সে সবের বৈধ উত্তরাধিকার । হেগেলের দর্শন, অ্যাডাম স্মিথ, ডেভিড রিকার্ডোর অর্থনীতি তত্ত্ব এবং ঊনবিংশ শতাব্দীর ফরাসি সমাজতন্ত্রের সমন্বয়ে তিনি সমাজের সমালোচনা করেন যেটাকে তিনি বৈজ্ঞানিক ও বিপ্লবী দাবি করেন।