জন্মদিনে গুগলের ডুডলে সুফিয়া কামাল
সময়ের আলো ডেস্ক
|
নারী আন্দোলনের অগ্রণী নেত্রী, ধর্মান্ধতা ও অসাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে অকুতোভয় যোদ্ধা, মানবতা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে সোচ্চার কবি বেগম সুফিয়া কামালের ১০৮তম জন্মদিন উপলক্ষে বিশেষ ডুডল বানিয়েছে বিশ্বের সর্বাধিক জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন গুগল। বুধবার রাত ১২টার পর থেকে গুগলে প্রবেশ করলে চোখে পড়ছে চোশমা ও শাড়ি পরিহিত কবি সুফিয়া কামালের প্রতিকৃতি। কবির প্রতিকৃতির পিছনে সবুজ বর্ণে লেখা গুগল। বিভিন্ন দিবস, ব্যক্তি ও ঘটনার স্মরণে গুগল তাদের হোম পেজে বিশেষ লোগো ফুটিয়ে তোলে, যা ডুডল হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশের বিভিন্ন দিবস ও ব্যক্তির স্মরণে এ ধরনের ডুডল প্রায়ই প্রকাশ করে গুগল। গুগল তাদের ডুডল পেজে লিখেছে, কবি বেগম সুফিয়া কামালের ১০৮তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯১১ সালের এই দিনে বরিশালের শায়েস্তাবাদের নবাব পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। সুফিয়া কামাল ছিলেন একাধারে কবি, নারী আন্দোলনের অগ্রণী নেত্রী, ধর্মান্ধতা ও অসাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে অকুতোভয় যোদ্ধা। ডুডলে কবির ছবির পাশাপাশি আঁকা হয়েছে সোচ্চার নারীদের ঐক্যবদ্ধ ছবি। নারীরা হাতে হাত ধরে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছেন। নারীদের ছবির মাঝে ফুঁটে তোলা হয়েছে রক্তিম সূর্য, যেন নতুন দিনের শুরু। সুফিয়া কামালের ছবির উপর ক্লিক করলে তার সম্পর্কে বিভিন্ন পেজে নিয়ে যাচ্ছে গুগল। ১৯১১ সালের ২০ জুন বরিশালের শায়েস্তাবাদে কবির জন্ম। সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি দীর্ঘ কর্মজীবনে সুফিয়া কামাল মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী গণআন্দোলন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলন, নারীমুক্তির আন্দোলনসহ বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় সাহসী ভূমিকা রেখেছেন। ১৯৫৬ সালে ‘কচি-কাঁচার মেলা’ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৬১ সালে ছায়ানটের সভাপতি, ১৯৬৯ সালে গণআন্দোলনের সময় মহিলা সংগ্রাম কমিটির সভাপতি, ১৯৭০ সালে মহিলা পরিষদ গঠন এবং ওই সময়ে অসহযোগ আন্দোলনে নারী সমাজের নেতৃত্ব দেন। সুফিয়া কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মহিলা হোস্টেলকে ‘রোকেয়া হল’ নামকরণের দাবি জানান। পরে তার নামেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি হল করা হয়। ১৯৯৯ সালের ২০ নভেম্বর সুফিয়া কামাল মৃত্যুবরণ করেন। সাহিত্য ও অন্যান্য ক্ষেত্রে অবদানের জন্য জীবিতকালে কবি সুফিয়া কামাল প্রায় ৫০টি পুরস্কার লাভ করেন। যার মধ্যে রয়েছে- বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬২), লেনিন পদক (১৯৭০, সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে), একুশে পদক (১৯৭৬), নাসিরউদ্দিন স্বর্ণপদক, রোকেয়া পদক, জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কার (১৯৯৫) ও স্বাধীনতা দিবস পদক। ১৯৬৯ সালে পাকিস্তান সরকার তাকে ‘তমসা-ই-ইমতিয়াজ’ পুরস্কার দেয়ার ঘোষণা দিলে কবি সুফিয়া কামাল তা প্রত্যাখ্যান করেন। |