নড়াইল জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসেন বিশ্বাস দৈনিক সময়ের আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, একটি পরিচ্ছন্ন ও সুষম উন্নয়নের জেলা হিসেবে নড়াইলকে গড়ে তুলতে চাই। এ লক্ষ্যেই আমি জেলা পরিষদের সবাইকে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, শহর ও গ্রামের ব্যবধান কমিয়ে আনতে চাই। সব সুযোগ-সুবিধা যাতে গ্রামের মানুষ সমানভাবে পেতে পারে সেই লক্ষ্যে আমি আমার বর্তমান পরিষদকে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। নড়াইল শহরের প্রাণকেন্দ্র মহিষখোলা মৌজায় জেলা পরিষদ ভবন অবস্থিত। ১৯৮৪ সালের ১ জুলাই নড়াইল পূর্ণাঙ্গ জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। নড়াইল সদর, লোহাগড়া, কালিয়া এই ৩টি উপজেলা ও নড়াগাতী নামে একটি থানা নিয়ে জেলা পরিষদ গঠিত।
নড়াইল জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসেন বিশ্বাস ২০১৭ সালের ২৩ জানুয়ারি নির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে আনুষ্ঠানিকভারে দায়িত্ব গ্রহণ করেন ।
দৈনিক সময়ের আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন বিশ্বাস বলেন, নড়াইলকে একটি বাসযোগ্য পরিছন্ন জেলায় রূপান্তর করতে কাজ করে যাচ্ছি। শহরের সঙ্গে গ্রামের ব্যবধান যেভাবেই হোক কমিয়ে আনতে চাই। শহরের সব সুযোগ-সুবিধা গ্রামের মানুষ যাতে সমানভাবে পেতে পারে সেই লক্ষ্যে আমি আমার বর্তমান পরিষদকে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আগামী দিনেও এ কার্যক্রম আমি অব্যাহত রাখব ইনশালাল্লাহ।
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর কী কী উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন জানতে চাইলে মো. সোহরাব হোসেন বিশ্বাস বলেন, দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকে আমি নড়াইলের সার্বিক উন্নয়নে কাজ শুরু করি। জেলার সব উপজেলা ও থানায় উন্নয়নমূলক কাজ চলমান রয়েছে। প্রত্যেক ইউনিয়নে প্রায় ৮৫ ভাগ রাস্তার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ ছাড়া স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দির, গোরস্থান ও শ্মশানঘাটে ব্যাপকহারে উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে এবং উন্নয়নমূলক কাজগুলো চলমান রয়েছে।
জনগণের কাছে দৃশ্যমান কী কী কাজ করেছেন জানতে চাইলে নড়াইল জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, বীরশ্রেষ্ঠ নুর মোহাম্মাদ ভবন, নড়াইল শহরে জেলা পরিষদের কয়েকটি মার্কেট, যাত্রী সাধারণের জন্য বাসস্ট্যান্ডগুলোয় যাত্রী ছাউনি করেছি এবং পানি খাওয়ার জন্য টিউবওয়েল বসিয়েছি। এলাকার বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি, অসহায় দরিদ্র মহিলাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে সেলাই মেশিন বিতরণ করেছি। প্রশিক্ষণ চলাকালীন ভাতার ব্যবস্থা করেছি। প্রশিক্ষণ নিয়ে যাতে তারা পরিবারের কাজে লাগে এবং নিজেরাও স্বাবলম্বী হতে পারে এই উদ্দেশ্য নিয়ে আমরা কাজ করছি।
অন্য সেবা সংস্থাগুলো থেকে ব্যতিক্রম কী করেছেন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় নড়াইলকে আমরা ভিক্ষুকমুক্ত করেছি এবং ভিক্ষুকদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেছি। টেকসই পুনর্বাসনের ব্যবস্থার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের জেলায় অনেক প্রতিবন্ধী ছেলেমেয়ে রয়েছে তাদের চাহিদামতো প্রতিভা বিকাশে কাজ করে করছি। তারা যেন নিজেকে সমাজের বোঝা মনে না করে।
নড়াইল জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞ, তিনি মাশরাফির মতো মানুষকে নমিনেশন দিয়েছেন। এই রকম একজন এমপি পেয়ে আমরা ধন্য যে আমাদের অবহেলিত নড়াইলকে তিনি উন্নয়নের মূল ধারায় নিয়ে যাবেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের নড়াইলবাসীর দীঘদিনের দাবি ঐতিহ্যবাহী ভিক্টোরিয়া কলেজকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ও নড়াইলে একটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল করে দেবেন।
নড়াইল জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আরও বলেন, আমার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নাই। ভিক্টোরিয়া কলেজে পড়াকালীন ছাত্রলীগের রাজনীতি দিয়ে আমার রাজনৈতিক জীবন শুরু। আপনারা জানেন, নড়াইলের জনগণ ভালোবেসে আমাকে তিনবার নড়াইল পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছে, দুই বার নড়াইল উকিলবারের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছি, সর্বশেষ বর্তমানে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে আছি। আমি জনগণের সঙ্গে ছিলাম, জনগণের সঙ্গে আছি, যত দিন বেঁচে আছি জনগণের সঙ্গে থাকতে চাই।