লক্ষ্যে পৌঁছাতে চ্যালেঞ্জ অনেক : অধ্যাপক ড. হারুন-উর-রশিদ
আদিল সরকার কুষ্টিয়া
প্রকাশ: বুধবার, ১৫ মে, ২০১৯, ৩:৪৭ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
উচ্চশিক্ষায় মানোন্নয়নের কোনো শেষ নেই। কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়টিকে আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে কোর্স-কারিকুলাম সংস্কার, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ, বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে শিক্ষা বিনিময় চুক্তি সম্পাদানে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। তবে চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছতে এখনও অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলে উল্লেখ করেন স্বাধীন বাংলাদেশে স্থাপিত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রথম সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২তম উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী। উচ্চশিক্ষা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা বিষয় নিয়ে দৈনিক সময়ের আলোর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় তিনি এসব কথা বলেন।
আর্থিক সীমাবদ্ধতা এবং ক্যাম্পাসের অবস্থানগত অসুবিধা একটি বড় প্রতিবন্ধকতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে নতুন আটটি বিভাগ চালু করা হয়। রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবন চালু হওয়ায় শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুমের সংকট অনেকটা কমেছে। বিশ^বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার মেগা প্রকল্প সম্পূর্ণ সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী বাস্তবায়িত হবে। ই-টেন্ডারিং প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে চালু করা হয়েছে। অতীতের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে যথেষ্ট সতর্কতার সঙ্গে আমরা অগ্রসর হব। মেগা প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে শিক্ষার্থীদের ক্লাস রুমের আর সংকট থাকবে না। পরিবহন সংকট দূর করতে শিগগিরই শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন বাস কেনা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯ বছরে কোনো উপাচার্য তার নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষ করতে পারেনি। বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী আড়াই বছর পার করেছেন। মেয়াদপূর্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যেনতেনভাবে মেয়াদ শেষ করা আমার লক্ষ্য নয়। সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে অর্পিত দায়িত্ব পালন করে যেতে চাই। ক্রমবিকাশমান ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের টেকসই উন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবারের সবার কাছ থেকে ইতিবাচক ও দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশা করি। তিনি বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজড করতে সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রশাসনিক সব কাজে ডিজিটালাইজেশনের কাজ চলছে। ডিজিটালভাবে পরীক্ষার ফল প্রদানের প্রক্রিয়া শেষের পথে। লাইব্রেরি অটোমেশনের কাজ দ্রুতগতিতে চলছে।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে সাংস্কৃতিক চর্চা এখন ভালো হচ্ছে। বাঙালি কৃষ্টি-সংস্কৃতির সব আয়োজনই জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালিত হচ্ছে। বাংলা ১৪২৬ বর্ষবরণে ভারতীয় শিল্পীদের এনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হয়েছে। এই উৎসবকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষের ঢল নেমেছিল। ফেব্রুয়ারি মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজট এখন আর সংকট নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগে চার বছরের স্নাতক (সম্মান) কোর্স শেষ করতে এক থেকে দেড় বছর বেশি সময় লাগত। এখন সময়মতো শিক্ষা কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারছে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে সান্ধ্যকালীন কোর্স বাতিল করা হলেও সম্প্রতি তা চালু করতে শিক্ষকরা আন্দোলনে নামে। পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয়টিতে সান্ধ্যকালীন কোর্স চালু করা নিয়ে ড. রশিদ আসকারী বলেন, যেসব কারণে সান্ধ্যকালীন কোর্স বাতিল করা হয়েছিল সেগুলো দূরীভূত করেই তা চালুর বিষয়টি পুর্নবিবেচনা করা যেতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের বিদ্যমান কর্মঘণ্টা অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।